ধনিয়াপাতার অপকারীতা বা কুফল ধনিয়াপাতার কিছু উপকারীতা থাকলেও এর ক্ষতিকর বা অপকারীতা বেশি । তাই অধিক পরিমানে ধনে পাতা খেলে নিম্নের পার্শপ্রতিক্রিয়া হতে পারে । ডক্টরের পরার্মশ ছাড়া ধনেপাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন ।
১। লিভারের ক্ষতি করতে:
এটা তো আমরা জানি কোন কিছুর অতিরিক্ত খাওয়াটা দেহের জন্য ভাল না, সে যত উপকারি হক না কেন। ধনেপাতার গুণাগুণ অনেক। কিন্তু অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতা কমাতে ভূমিকা রাখে। ধনেপাতায় থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে। এছাড়া ধনেপাতাই এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যেটা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় ধনেপাতা খেলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে।
২। নিম্ন রক্তচাপঃ
অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে দেহের হৃৎপিন্ড নষ্ট করে ফেলে, যার ফলে নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে নিম্ন রক্তচাপের উদ্ভব ঘটতে পারে। এছাড়া এটি হালকা মাথাব্যথারও উদ্রেক করতে পারে।
৩। পেট খারাপঃ
ধনেপাতা পরিমাণমত গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে। কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা খেলে পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে থাকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে এক সপ্তাহে ২০০ এমএল ধনেপাতা আহারে গ্যাসের ব্যথা ওঠা, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে ওঠা, বমি হওয়া এমনকি পাতলা পায়খানা হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা যায়।
৪। ডায়রিয়াঃ
ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয়। কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়া এর ফলে ডিহাইড্রেশন হতে থাকে। ফলে ডায়রিয়ার সমস্যাটি হতেই থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের খাবারে ধনেপাতা কম পরিমাণে ব্যবহার করুন।
(source: fb.com/princemahbubofficial)
৫। নিঃশ্বাসের সমস্যাঃ
যদি কোন মানুষ শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে থাকে তাহলে ধনেপাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। কেননা এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা করে। যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে। এই ধনেপাতা খেলে মাঝে মাঝে ছোট ছোট নিশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়।
৬। বুকে ব্যথাঃ
অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে বুকে ব্যথার মতো জটিল সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না তা দীর্ঘস্থায়ীও হয়ে থাকে। এজন্য এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম করে এই ধনেপাতা খেতে পারেন।
৭। ত্বকের সংবেদনশীলতাঃ
সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ওষধি অ্যাসিডিক উপাদান থাকে যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। তাই ত্বক ভিটামিন থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকের ক্যানসার প্রবণতাও তৈরি করে থাকে।
৮। ভ্রুণের ক্ষতিঃ
গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান মহিলাদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে মহিলাদের বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা লোপ পায় এবং বাচ্চা ধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রুণের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে।
৯। প্রদাহঃ
অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়াই আরেকটি বিশেষ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো মুখে প্রদাহ হওয়া। এই ঔষধিটির বিভিন্ন এসিডিক উপাদান যেটি আমাদের ত্বককে সংবেদনশীল করে থাকে। পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে এর ফলে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এর ফলে সারা মুখ লালও হয়ে যায়।
১০। অ্যালার্জির সমস্যাঃ
ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে। ফলে অ্যালার্জি তৈরি হয়। এই অ্যালার্জির ফলে দেহে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, ওঠা এই ধরনের নানা সমস্যা হয়ে থাকে।